ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উখিয়া রত্নাপালং ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ-বিএনপির প্রার্থীর চেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছে বড় ফ্যাক্টর

Pic Ratna Panlog Charman Pratti 01-04-2016ফারুক আহমদ, উখিয়া ::

উখিয়া উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন হচ্ছে রতœাপালং। ব্যবসা বাণিজ্য ও ভৌগিক অবস্থানের কারণে প্রাণ কেন্দ্র হচ্ছে এ ইউনিয়নটি। শিক্ষা সাহিত্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চ্চায় রতœাপালং ইউনিয়ন অনেক এগিয়ে। বিশেষ করে শিক্ষার হার এবং উচ্চ শিক্ষায় এ ইউনিয়নটির সুনাম রয়েছে। তাই রতœাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি অন্যান্য ইউনিয়নের চেয়ে খুবই মর্যদা পূর্ণ। এবারে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ বিরোধী দল বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর পাশা-পাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেছে। ভোটারদের ধারনা দলীয় প্রার্থীর চেয়ে ব্যক্তি ইমেজ নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের তপশীল অনুযায়ী আগামী ৪ মে মনোনয়ন পত্র গ্রহণের শেষ তারিখ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার জন্য আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হাইকমান্ডের দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। পাশা-পাশি দলীয় নেতাকর্মী ও তৃণমূল ভোটারদের সাথে যোগাযোগ করে যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী খায়রুল আলম চৌধুরী ব্যক্তি ইমেজ কে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী মাঠে বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে বলে সাধারণ ভোটারগণ জানান।

সরজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীর দখলে রতœাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি দখলে রয়েছে। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ১৬ বছর পর্যন্ত বিএনপির নেতা মো: আব্বাস উদ্দিন চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বপালন করেন। এবং ২০১১ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোট সমর্থিত নুরুল কবির চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ বিএনপির দূর্গে হানা দিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছে। তবে বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে ২২ বছর ধরে দখলে থাকা চেয়ারম্যান পদটি রক্ষা করার জন্য। উল্লেখ্য যে, প্রত্যেক ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পেছনে মূখ্য ভূমিকা পালন করতেন জনপ্রিয়নেতা খায়রুল আলম চৌধুরী।

দলীয় নেতাকর্মীর সাথে এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন উখিয়া আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আদিল উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল মনসুর চৌধুরী ও উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছৈয়দ মোহাম্মদ নোমান। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন ও ২০ দলীয় জোটের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধূরী এবং সাধারণ ভোটারের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে খায়রুল আলম চৌধুরী বেশ জোরেশোরে নির্বাচনী গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।

জাতীরজনক বঙ্গবন্ধুর সহচর ও মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক সফল চেয়ারম্যান মরহুম শমশের আলম চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আদিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, একজন রাজনীতিবিদ ও সমাজ সেবক হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের নেত্রী মনোনয়ন দিলে আমি নৌকা মার্কার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করব। আবুল মনসুর চৌধুরী জানান, ১৯৭৮ সালে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সফল সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৮৫ সালে উখিয়া আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করেন। তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেলে রতœাপালং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে তার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী খায়রুল আলম চৌধুরী জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে ভালুকিয়া পালং তথা বৃহত্তর পূর্বাঞ্চল মানুষের পাশে থেকে সমাজ সেবা ও জনকল্যাণ মূলক কাজে জড়িত রয়েছি। মানবসেবা কে ইবাদত হিসাবে গ্রহণ করে তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের জন্য নিরপক্ষ চেয়ারম্যান হওয়া উচিত। তাই রাজনীতির উর্ধেথেকে দল মত নির্বিশেষে জনগণের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রার্থী হয়েছি। এতে সাধারণ ভোটারদের ব্যাপক ছাড়া পেয়েছি। বর্তমানে নির্বাচনী মাঠে জনপ্রিয়তা ও ভোটারদের উৎসাহ উদ্দীপনা এবং সমর্থন থাকায় আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার বেশ আশাবাদী। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, জেলা বিএনপির সদস্য হিসাবে শহীদ জিয়ার হাতে গড়া সংগঠন জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রতি আমার দূর্বলতা সবসময় রয়েছে। বিএনপির হাইকমান্ডের যেকোন সুপারিশ ও পরামর্শ আমার বিবেচনায় থাকবে।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আব্বাস উদ্দিন বলেন, ১৯৯৪ সাল, ১৯৯৯ সাল ও ২০০৪ সালে পর পর ৩ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় আমার গ্রহণ যোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা রয়েছে। এবারেও বিএনপির মনোনয়ন পেলে ধানেরশীষ মার্কায় নিয়ে নির্বাচন করলে তিনি নির্বাচিত হবেন। বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরীর সাথে প্রতিক্রিয়ার জানার জন্য টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বক্তব্য দিতে অপরাগত প্রকাশ করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

##

পাঠকের মতামত: